শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ অপরাহ্ন
সদ্যপ্রাপ্ত খবর :
অটিস্টিক শিশুদের আবাসন ও কর্মসংস্থান করবে সরকার   ||   নারীর প্রতি যৌন ও পারিবারিক সহিংসতা ক্রমাগতই বাড়ছে   ||   শান্তিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নব-নির্বাচিত সভাপতি হলেন মৃত্যুঞ্জয়ী ছাত্রনেতা ছদরুল ইসলাম  ||

ভূ-রাজনৈতিক নড়াচড়ায় কী পাবে বাংলাদেশ?

মোস্তফা কামাল / ২৪০ বার পঠিত:
আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২২
তেল থাকলে প্রদীপ জ্বলবেই

রাজনীতি নয়, তারা মাথা ঘামান বাংলাদেশে ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে- এতোদিন চীনের বলা এমন কথা সম্প্রতি বলতে শুরু করেছে ভারত। কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে এ অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে নড়াচড়ার আংশিক ফল মাত্র। হাই-প্রোফাইলের এ কূটনীতি বুঝতে এখন আর ঝানু কূটনীতিক হওয়া লাগছে না। বিষয়টি এখন আর চীন-ভারত লড়াইর মধ্যে সীমিত নেই। বৈশ্বিক রাজনীতিতে সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব বিস্তার করেই চলছে। এর জেরে পরাশক্তিকেন্দ্রিক নতুন মেরুকরণের নমুনা। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের ওপর এর কী প্রভাব পড়তে পারে- এ নিয়ে আলোচনা বেশ সরগরম। বিশ্লেষণ নানামুখী। সারসংক্ষেপ তোলাই থাকছে।

ভূরাজনৈতিক অবস্থানের কারণে চীন-ভারত দ্বন্দ্বের প্রভাব বাংলাদেশের ওপরে না পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এটাই বাস্তবতা। কৌশলগত হাল রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বন্ধু ভারত। আর শত্রু চীন। কোয়াডের মতো জোটে বাংলাদেশকে যোগ দেয়ানোর চেষ্টা করে সুফল নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে সামরিক জোট অকাসতো আছেই। কোয়াড এবং অকাস গঠনের মূল উদ্দেশ্য চীনকে রোখা। বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য বিষয়টি স্পর্শকাতর। বাংলাদেশকে করণীয় ঠিক করতে হচ্ছে ডান-বাম, আগ-পিছ ভেবে।

বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের বেশিরভাগই হচ্ছে চীনা অর্থায়নে। স্বাভাবিকভাবে তা চীনের ওপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। এর মাঝেই চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এশীয় অঞ্চলে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই ভারতনির্ভর। ভারত কোয়াড জোটেরও শরীক। তা বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকির। আবার ভূকৌশলগত সুবিধাও এনে দিয়েছে। সেই সুবিধার পথে যেন বাংলাদেশ এগুবার সাহস না পায় সেই উদ্দেশ্যেই মানবাধিকার ও র‌্যাব নিয়ে বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নানা চাপ। যার সঙ্গে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এবং এ অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের নানা উপাদান।

পরিস্থিতির এ অনিবার্যতায় বাংলাদেশকে বেশি-বেশি করে বলতে হচ্ছে- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। রোহিঙ্গাদের নিয়ে চলা আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক পরিস্থিতিও সামলাতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে অস্ত্র ব্যবহার এবং হত্যাকাণ্ড, স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘাত এবং হত্যা ও মাদক পাচারসহ নানা অপকর্মের পেছনে চীন-মিয়ানমারসহ দেশি-বিদেশি মহলের সম্পৃক্ততাও ধরা পড়ছে।

মিয়ানমার বরাবরই চীনের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে আবার পুরোদমে সেনাশাসন কায়েম হওয়ার পর সামরিক সরকার আরো বেশি চীননির্ভর। ভূরাজনৈতিক কারণে চীনের কাছে মিয়ানমার অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশি। একইভাবে মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতাও ব্যাপক। এতে সমীকরণটি আরো জটিল হয়ে উঠছে। যার বিশেষ এক ঝলক দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনে।

কমিউনিজম শাসিত চীনকে মোকাবেলার জন্য কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মতবাদ দাঁড় করিয়ে ডাকা সম্মেলনটিতে দাওয়াত দেয়া হয়নি গণতন্ত্র এবং পুঁজিবাদ মেলানো বাংলাদেশকে। এর ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে ‘গুম’ এর যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা এখনই থামাতে হবে। এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে কেবল টিকে থাকা নয়, সামনে এগুতেও হচ্ছে বাংলাদেশকে। তা অনেকের হিসাবে গণ্ডগোলে পাকিয়ে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে সম্ভাব্য পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নিয়ে নানা বিশ্লেষণ। দেশের অনিষ্ট প্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়।

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট; বার্তা সম্পাদক, বাংলাভিশন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো সংবাদ