ফুটবল ইজ কামিং হোম। এক-একটা টুর্নামেন্ট শুরু হলেই ইংল্যান্ডে এই সুর বাজতে শুরু করে। কিন্তু নিজেদের ফুটবলের জনক দাবি করা দলটি শেষ পর্যন্ত আর হাসিমুখে ঘরে ফিরতে পারে না। এবারও সেই সুর বাজছে জোরেসোরে। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালই যে অনেক বছর দেখেনি থ্রি লায়ন্সরা। ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ তারা এই টুর্নামেন্টের শেষ চারে খেলেছিল।
২৫ বছর পর আবারও সেই স্বপ্ন হাতছানি দিচ্ছে। সেজন্য আজ (বাংলাদেশ সময় রাত একটায়) গ্যারেথ সাউথগেটের দলকে পেরোতে হবে ইউক্রেন-বাধা। ইতালির রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি। বরাবরের মতো কাগজে কলমে অন্যতম সেরা দল নিয়ে টুর্নামেন্টে এসেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু মাঠে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে যৎসামান্যই। গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচে মাত্র দুই গোল করে নকআউটের টিকিট হাতে নিয়েছে তারা। জার্মানির বিপক্ষে শেষ ষোলোতেও শুরুটা ভালো ছিল না। ৭৫ মিনিট গোলশূন্য থাকা ম্যাচটিতে ১১ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল দিয়ে জয়ের রাস্তা পেয়ে যায় সাউথগেটের দল।
তবে রহিম স্টার্লিং, হ্যারি কেইনরা দলকে উৎড়ে দিলেও টিম পারফরম্যান্স এখনও পায়নি থ্রি লায়ন্সরা। অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ ইউক্রেনের বিপক্ষে সেই পারফরম্যান্সটা দেখার অপেক্ষায় সাউথগেট। ইউক্রেন নকআউটে এসেছে কিছুটা ভাগ্যের জোরে, এক জয়ে গ্রুপে তৃতীয় হয়ে। এরপর সুইডেনের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে অতিরিক্ত সময়ের শেষ মুহূর্তে নাটকীয় জয় পায় তারা। ভাগ্য সবসময়ই সঙ্গে ছিল। তবে ইংল্যান্ড কিছুতেই প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নিচ্ছে না। দলের কোচ সাউথগেট বলেন, ‘মাঠে নেতৃত্ব প্রয়োজন আর আমাদের বেশ কয়েকজন ভালো নেতা রয়েছেন। ইউক্রেনের ফরোয়ার্ডরা যেকোনো মুহূর্তে আতংক সৃষ্টি করতে পারে। তাদের স্পিরিট খুবই উঁচুমানের। সুইডেনের বিপক্ষে তারা সেটা দেখিয়েছে।’
ইউক্রেনের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় ও ২০০৪ সালের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো এখন জাতীয় দলের কোচ। প্রতিপক্ষ যে কতটা শক্তিশালী, সেটা ভালোই জানা আছে তার। তবে এতদূর এসে যে এত সহজেই লড়াইয়ে ক্ষান্তি দেবেন না, ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ইউক্রেন ম্যানেজার। শেভচেঙ্কো বলেন, ‘আমরা শেষ আটে আছি। আমাদের ভবিষ্যত নিজেদের হাতে ছিল। সেটা আমরা বদলাতে পেরেছি। ইংল্যান্ড দারুণ একটা দল। ভালো একজন ম্যানেজার ও বেশ কয়েকজন ভালো খেলোয়াড় আছে ওদের। ম্যাচটা আমাদের জন্য কঠিন হবে।’ দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়েও পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে ইংল্যান্ড। ইউক্রেনের বিপক্ষে খেলা ৭ ম্যাচে মাত্র একবারই হেরেছে থ্রি লায়ন্সরা। ইউরোতে দুই দলের একবার দেখা হয়েছিল। ২০১২ সালের সেই ম্যাচ ১-০ গোলে জিতেছিল ইংল্যান্ড। তবে পরিসংখ্যান আর অতীত নকআউটের লড়াইয়ে আসলে বড় কোনো পার্থক্য গড়ে দেয় না। এক ম্যাচের ভুলই শেষ করে দিতে পারে সব। দুই দলের লক্ষ্য তো একই, সেমিফাইনাল।