যথাযোগ্য মর্যাদা এবং উৎসবের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২১ উদযাপন করেছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশন। এ উপলক্ষে এক অনলাইন আলোচনা সভার আয়োজন করে ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে প্রবাসী শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা এবং অনলাইনভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিনের শুরুতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিকেলে শুরু হওয়া আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে রাষ্ট্রদূত জন্মদিনের কেক কেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেয়া বাণী পাঠ করা হয়।
‘স্বাধীনতার ৫০ বছর : বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও বিশিষ্ট কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন। আলোচকরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার বিভিন্ন পর্যায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম, পরবর্তীকালে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের নেতৃত্ব এবং স্বাধীনতাত্তোর দেশ পুনর্গঠন ও জাতির সেবায় বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং আত্মত্যাগ সম্পর্কে সারগর্ভ আলোচনা করেন। তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ মাতৃকার সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আলোচনা সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি, সাংবাদিক, ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিরা অংশ নেন। রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কৈশোর থেকেই বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন ও সংগ্রাম তাকে পরবর্তীতে বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক আপসহীন, দৃঢ়চেতা ও অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত করে। বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গেঁথেছিল যার ফলে বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃপ্ত পদক্ষেপে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা ও অনলাইনভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোররা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ও বিজয়ী শিশু-কিশোরদের নাম ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সব শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।